-->

উপমহাদেশের Education System-কে চাকর বানানোর কাজে manipulate করেছে ইংরেজরা ।

উপমহাদেশের Education System-কে চাকর বানানোর কাজে manipulate করেছে ইংরেজ। 

Education_System_manipulation
উপমহাদেশের Education System-কে চাকর বানানোর কাজে manipulate করেছে ইংরেজ।

ভারতের প্রাচীন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্য অস্বস্তিকর এক পার্থক্য তৈয়ারি হয়েছে। শিক্ষার দিকে ভারত একসময়  মূল্যবান দেশ ছিল। উদহারণ স্বরূপ আজকের দিনে মানুষের স্বপ্ন Texas University, Columbia University, Stanford University, Boston University ইত্যাদি-তে পড়াশোনা করা। 

ঠিক এমন এক সময় ছিল যখন প্রাচীন ভারতে ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত বিশ্ববিদ্যালয় গুলি যথা- Nalanda University (425 AD -1205 AD), Takahashila (600BC-500BC), Vikramshila University (800 AD – 1203 AD), Vallabhi University (600 AD – 1200 AD), Nagarjuna Vidyapeeth (600 AD) ইত্যাদি।  আর এই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বাইরের দেশের রাজা মহারাজা (শ্রী লংকা, চীন ইত্যাদি) আসতেন জ্ঞান অর্জন করতে। Xuanzang (হিঃ য়েন স্যাং) কি জন্য এসেছিল ভারতে? ভারতের জ্ঞান, ধ্যানকে অর্জন করার জন্য। 

সুতরাং ভারতের Education Policy এবং System এতটাই স্বয়ং সম্পূর্ণ ছিল, যেমন দুনিয়া আজ শিক্ষার জন্য আমেরিকা যেতে চায়, ঠিক সেভাবে দুনিয়া একসময় ভারতে এসেছে। 

কারণ, বিদ্যার কাজ বিবেক'কে জাগ্রত করা, সচেতন মানুষের জন্ম দেওয়া। এমন এক সুবিশাল শক্তি, যে শক্তিতে প্রাচীন ভারত সমৃদ্ধ ছিল। কিন্তু কালক্রমে তা ধ্বংস হয়ে যায়।  

কিন্তু আজকের দিনে ভারতের শিক্ষা ব্যাবস্থা মানুষকে সেবক বানানো, চাকর বানানোর কাজে ব্যবহার করছে। যেদিকেই তাকাবেন দেশের ৯৫% মানুষ আজ চাকরি করার জন্য পড়াশোনা করে। চাকরি করা খারাপ নয়, অনেক ভালো।  কিন্তু চাকরি করার জন্য পড়াশোনা করা এটা খারাপ। আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ আমাদের জীবন শুরুই করতে হয় চাকরি খোঁজার মাধমে। দ্বিতীয় কোনো উপায় নেই আমাদের কাছে, আমাদের পরিবেশ আমাদের এমন হতে বাধ্য করছে। 


১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে East India Company ভারতের উপর কলোনীয়াল (colonial) শাসন ব্যাবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে পৌঁছাতে পৌঁছাতে ভারতীয় উপমহাদেশের বিশাল এক ভূ-খন্ডের উপর কব্জা করতে সক্ষম হয়। 

দেখুন ভারতের শিক্ষা ব্যাবস্থার সঙ্গে কোথায় থেকে খেল শুরু হয়েছে। ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ হতে হতে বাংলা বিহার উড়িষ্যা দখল করে নিলো, ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে মহীশুর দখল করলো, ১৮১৬ খ্রিস্টাব্দে মারাঠা (মহারাষ্ট্র) দখল করলো। 

একটি ব্রিটিশ কোম্পানি যার উদ্ধেশ্য ছিল ভারতীয় সম্পদের উপর শোষণ। যাদের লক্ষই ছিল ভারত এবং ভারতীয়দের উপর শোষণ।

আমাদের লক্ষই যদি হয় কারু উপর শোষণ করা তবে আমরা তাকে সচেতন কেন করবো? জ্ঞান কেন দান করবো? যদি কোনো ব্যাক্তির লক্ষই হয় শোষণ করা, তবে শাসনকারী ব্যক্তি শোষিত ব্যাক্তিকে কখনোই সচেতন করার জ্ঞান দিবে না নিশ্চই। কারণ সচেতন /বিবেক এমন এক বড় শক্তি যা কয়লাকে হীরা বানাতে পারে।

১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের পর যখন কোম্পানির বিশাল বড় ভূভাগের উপর দখল ক্ষমতা চলে আসে। তখন East India Company-র সামনে এক বড় সমস্যাও চলে আসে। উচ্চপদস্থ কর্মচারী (অধিকারী) ইংল্যান্ড থেকে নিয়ে আসা যাবে কিন্তু নিম্ন পদস্থ চাকর ও কর্মচারী ইংল্যান্ড থেকে নিয়ে আশা মুশকিল। Army-র অধিকারী, Civil Service-র অধিকারী, Judicial Service-র অধিকারী সবগুলিকে নিয়ে আসা যাবে।  অধিকারী, যাদের ৫০০ রুপীর উপর বেতন হবে তারা সবাই শ্বেতাঙ্গ হবে।  নিম্ন পদস্থ চাকর ও কর্মচারীও যদি ইংল্যান্ড থেকে নিয়ে আশা হয় তবে ইংল্যান্ডের জনগণই শেষ হয়ে যাবে। তবে?

তবে, শিক্ষা তো ভারতীয়দের দিতেই হবে। ইংল্যান্ডে কন্ট্রোভার্সারি শুরু হয়ে গেলো, তারা দুই দলে বিভক্ত হয়ে গেলো। একদল শিক্ষা দেওয়ার পক্ষে অন্য দল শিক্ষা দেওয়ার বিপক্ষে। বিপক্ষ দলের যুক্তি, ভারতীয়রা অনেক বেশি বিচক্ষণ, এদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করলে দশ বছরের ভিতর East India Company-কে ভারত থেকে বিতাড়িত করবে। 

১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে পাশ করে Mecanica Declaration। আর এখান থেকেই শুরু হয় মর্ডান এডুকেশন বা ইংলিশ মিডিয়ামের শুরু। 

Mecanica Declaration বা The English Education Act (by William Bentinck)-র উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় গুরুকুল (মন্দির কেন্দ্রীক) শিক্ষা ব্যাবস্থাকে ধ্বংস করা। আর এখান থেকেই শিক্ষার উদ্দেশ্য হয়ে গেছে চাকর হওয়ার। এটাই সেই সময় যখন শিক্ষা এক ভুল রাস্তার দিকে ধাবিত হয়েছে। গ্রামীণ স্কুলগুলির নামকরণ করা হয়েছে সেন্ট এন্টোনি। 

গুরুকুল শিক্ষা ব্যবস্থা বিবেককে জাগ্রত করতো, আর সেন্ট এন্টোনির কাজ বিবেককে ধ্বংস করে সার্টিফিকেট দান করা।